০১.০২.২০১১ খ্রিঃ
মুহসীন হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রিয় আপু
অবতরণিকায় আমার স্নেহ-সমৃদ্ধ ভালোবাসা নিও। তুমি কেমন আছো? নিশ্চয়ই অনেক ভালো। নীলিমার নীল বাউন্ডুলে মেঘের সাথে তোমার হয়তো মিতালী হয়েছে। প্রজাপতির অলস বিহার হয়তোবা তোমার উপভোগের প্রীতি উপহার হয়েছে। প্রভাতের কোমল নিরীহ রোদ তোমার হৃদয়ে প্রান্তরে হয়তোবা নব আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে। সুখ সিন্ধুতে অবগাহনে তোমার প্রহরগুলো বোধ করি বিজয় ঢংকার সাথে নেচে নেচে ফিরে।
আর আমি? ৩৬৫ গুণন ১২ যোগ ৩ দিন আগে যেমন ছিলাম আজও তেমনি আছি। আমায় জীবনের ভরবিন্দুতে যে স্বপ্নপুরী ছিল তাকে নিয়েই আবর্তীত হচ্ছি। একটুও ভারসাম্যহীন হইনি। অক্ষশক্তির বলেই আমার প্রগতির চাকা দ্রুত বেগে আবর্তনশীল। অক্ষ শক্তির বলেই আমি আমার পেশার সর্বোচ্চ আসনের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রেমী স্পর্ধা দেখাই। সম্ভাবনার স্বপশীর্ষে জয়ের পদচিহ্ন আঁকার ব্যগ্র অপেক্ষায় কাটে আমার ক্ষণগুলো।
আপু, আজ তোমাকে আমার ‘না-বলা মুখবুঝে পথ চলা হৃদয়-ফাটা ক্রন্দনের কথা’ জানাব। জানাব আমার বোবা আকুলতার কথা। কথা দাও ‘তাঁকে’ তুমি আমার দীর্ঘ প্রতীক্ষার কথা জানাবে। যে আমার বেঁচে থাকার বিশ্বাস দিয়েছিল, তার কর্ণ কূহরে আমার নিরবচ্ছিন্ন প্রেম সাধনার বিজয় মন্ত্র পৌঁছে দিবে।
আপু আমার বক্ষকপাট খুলে দেখ। দেখ! কী আছে সেখানে। থামো, থামো, কুর্নিশ করার দরকার নেই। এই মানবী- যাকে কেবল আমিই প্রেমাঞ্জলি অর্পণ করি। আমার কুসুম নিবেদনেই কেবল তার প্রতি যথার্থ সম্মান ভালোবাসা-ভক্তি-শ্রদ্ধার প্রদর্শন হয়। আমি জানি সে শুধু আমার, কেবল আমার-ই।
তার দু’ফোটা অশ্রূজল যাকে আমি সপ্ত সিন্ধু অজস্র পারাবার অতিক্রম করে আমার বক্ষকূপে সংরক্ষণ করেছি যুগযুগান্তর ধরে। এটার বিকল্প মূল্য পৃথিবীতে নেই। এই দু’ফোটা জল আমাকে বাঁচতে শেখায়, আমার হাতে তুলে দেয় নতুন জীবন দর্শন। সেই দিন থেকে আমি নিজেকে তাঁর কাছে বন্ধক রেখে এলাম আর আমার হৃদয়কুঞ্জে বসালাম আমার মানস-বধুকে। বলো তো, এমন জীবন্ত গণগণে স্মৃতি মৃত ব্যক্তি ভিন্ন কেউ ভুলে থাকতে পারে??
১৯৮৮ সাল। ভাগ্যচ্যুত হয়ে আমি যখন ভাইয়ের বাসায় এলাম, সৌভাগ্যের রাণী হয়ে সে তখন আমার শুণ্য রাজ্য পূর্ণ করে দিলো। আমার সেই স্কুল বয়সের কচি মনে ওর শিশুছবি যে রূপে ফ্রেমবদ্ধ ছিলো, আজ চাকুরী জীবনে তেমনি আছে। আগে ওকে স্নেহ করতাম- ভালবাসতাম। আর আজ ওকে শুধুই ভালোবাসি। যে ভালোবাসা পেলে রঙ্গেরা রংধনু হয়। ফুলেরা তাদের ঘোমটা খুলে আনন্দ সৌন্দর্য ছড়ায়। পাখিদের মধ্যে কেউ কুহু কুহু ডাকে। পতঙ্গদের মধ্যে কেউ রাতের সাথে দুষ্টুমি করে, ফুলেরা অমৃত তৈরী করে। যে ভালবাসার চাপে পাহাড় ঝর্ণার আনন্দ হয়ে বেরিয়ে আসে। সেই ভালোবাসাই আমি তাকে জড়িয়ে রাখি প্রতিক্ষণ।
আজ হয়তো সে বিস্মৃত। হয়তো তার কিছুই মনে নেই। আমার ‘তুমি’ কে আমি কী না শিখিয়ে ছিলাম। সুন্দর করে কথা বলা, ছান্দিক পায়ে পথ চলাসহ পড়ালেখার প্রতি পর্বে ছিলো আমার নিমন্ত্রণ। আমি আর ও যেসব ছোট ছোট জলপাই গাছের পাতার কান মলে ছিলাম তারাও আজ অনেক বড় হয়েছে। যে সব কচি কোমল ঘাসের উপর ওর-আমার চরণতল স্পর্শ করেছিলো তারা অনেকে হয়তোবা নির্বাণ লাভ করেছে আর নতুবা সেই সব জায়গা জেগে আছে আমাদের পরিণত বয়সের চলার অপেক্ষায়! কানমলা খাওয়া বৃক্ষরা দাঁড়িয়ে আছে আমাদের শৈশব স্মৃতির সাক্ষী হয়ে।
আমার সেই ‘তুমি’ যে আমার মানস-পটে হাজার তারার মাঝে একখানা চাঁদ। হাজার ফুলের মাঝে একটি রক্তরাঙ্গা টুকটুকে গোলাপ। শত সমুদ্র দুঃখ কষ্টের মধ্যে চঞ্চল ঝর্ণার একটু হাসি, ছল ছল- কল কল পথ চলা আমার ভালোবাসা। আমার অবুঝ মনের সবুজ সজীব ভালোবাসা। আমার শিলা*, আমার শায়লা আক্তার শীলা*। সহজ সরলতার, নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের প্রতীক- আমার শিলু।...................... (চলবে.....)
মুহসীন হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রিয় আপু
অবতরণিকায় আমার স্নেহ-সমৃদ্ধ ভালোবাসা নিও। তুমি কেমন আছো? নিশ্চয়ই অনেক ভালো। নীলিমার নীল বাউন্ডুলে মেঘের সাথে তোমার হয়তো মিতালী হয়েছে। প্রজাপতির অলস বিহার হয়তোবা তোমার উপভোগের প্রীতি উপহার হয়েছে। প্রভাতের কোমল নিরীহ রোদ তোমার হৃদয়ে প্রান্তরে হয়তোবা নব আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে। সুখ সিন্ধুতে অবগাহনে তোমার প্রহরগুলো বোধ করি বিজয় ঢংকার সাথে নেচে নেচে ফিরে।
আর আমি? ৩৬৫ গুণন ১২ যোগ ৩ দিন আগে যেমন ছিলাম আজও তেমনি আছি। আমায় জীবনের ভরবিন্দুতে যে স্বপ্নপুরী ছিল তাকে নিয়েই আবর্তীত হচ্ছি। একটুও ভারসাম্যহীন হইনি। অক্ষশক্তির বলেই আমার প্রগতির চাকা দ্রুত বেগে আবর্তনশীল। অক্ষ শক্তির বলেই আমি আমার পেশার সর্বোচ্চ আসনের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রেমী স্পর্ধা দেখাই। সম্ভাবনার স্বপশীর্ষে জয়ের পদচিহ্ন আঁকার ব্যগ্র অপেক্ষায় কাটে আমার ক্ষণগুলো।
আপু, আজ তোমাকে আমার ‘না-বলা মুখবুঝে পথ চলা হৃদয়-ফাটা ক্রন্দনের কথা’ জানাব। জানাব আমার বোবা আকুলতার কথা। কথা দাও ‘তাঁকে’ তুমি আমার দীর্ঘ প্রতীক্ষার কথা জানাবে। যে আমার বেঁচে থাকার বিশ্বাস দিয়েছিল, তার কর্ণ কূহরে আমার নিরবচ্ছিন্ন প্রেম সাধনার বিজয় মন্ত্র পৌঁছে দিবে।
আপু আমার বক্ষকপাট খুলে দেখ। দেখ! কী আছে সেখানে। থামো, থামো, কুর্নিশ করার দরকার নেই। এই মানবী- যাকে কেবল আমিই প্রেমাঞ্জলি অর্পণ করি। আমার কুসুম নিবেদনেই কেবল তার প্রতি যথার্থ সম্মান ভালোবাসা-ভক্তি-শ্রদ্ধার প্রদর্শন হয়। আমি জানি সে শুধু আমার, কেবল আমার-ই।
তার দু’ফোটা অশ্রূজল যাকে আমি সপ্ত সিন্ধু অজস্র পারাবার অতিক্রম করে আমার বক্ষকূপে সংরক্ষণ করেছি যুগযুগান্তর ধরে। এটার বিকল্প মূল্য পৃথিবীতে নেই। এই দু’ফোটা জল আমাকে বাঁচতে শেখায়, আমার হাতে তুলে দেয় নতুন জীবন দর্শন। সেই দিন থেকে আমি নিজেকে তাঁর কাছে বন্ধক রেখে এলাম আর আমার হৃদয়কুঞ্জে বসালাম আমার মানস-বধুকে। বলো তো, এমন জীবন্ত গণগণে স্মৃতি মৃত ব্যক্তি ভিন্ন কেউ ভুলে থাকতে পারে??
১৯৮৮ সাল। ভাগ্যচ্যুত হয়ে আমি যখন ভাইয়ের বাসায় এলাম, সৌভাগ্যের রাণী হয়ে সে তখন আমার শুণ্য রাজ্য পূর্ণ করে দিলো। আমার সেই স্কুল বয়সের কচি মনে ওর শিশুছবি যে রূপে ফ্রেমবদ্ধ ছিলো, আজ চাকুরী জীবনে তেমনি আছে। আগে ওকে স্নেহ করতাম- ভালবাসতাম। আর আজ ওকে শুধুই ভালোবাসি। যে ভালোবাসা পেলে রঙ্গেরা রংধনু হয়। ফুলেরা তাদের ঘোমটা খুলে আনন্দ সৌন্দর্য ছড়ায়। পাখিদের মধ্যে কেউ কুহু কুহু ডাকে। পতঙ্গদের মধ্যে কেউ রাতের সাথে দুষ্টুমি করে, ফুলেরা অমৃত তৈরী করে। যে ভালবাসার চাপে পাহাড় ঝর্ণার আনন্দ হয়ে বেরিয়ে আসে। সেই ভালোবাসাই আমি তাকে জড়িয়ে রাখি প্রতিক্ষণ।
আজ হয়তো সে বিস্মৃত। হয়তো তার কিছুই মনে নেই। আমার ‘তুমি’ কে আমি কী না শিখিয়ে ছিলাম। সুন্দর করে কথা বলা, ছান্দিক পায়ে পথ চলাসহ পড়ালেখার প্রতি পর্বে ছিলো আমার নিমন্ত্রণ। আমি আর ও যেসব ছোট ছোট জলপাই গাছের পাতার কান মলে ছিলাম তারাও আজ অনেক বড় হয়েছে। যে সব কচি কোমল ঘাসের উপর ওর-আমার চরণতল স্পর্শ করেছিলো তারা অনেকে হয়তোবা নির্বাণ লাভ করেছে আর নতুবা সেই সব জায়গা জেগে আছে আমাদের পরিণত বয়সের চলার অপেক্ষায়! কানমলা খাওয়া বৃক্ষরা দাঁড়িয়ে আছে আমাদের শৈশব স্মৃতির সাক্ষী হয়ে।
আমার সেই ‘তুমি’ যে আমার মানস-পটে হাজার তারার মাঝে একখানা চাঁদ। হাজার ফুলের মাঝে একটি রক্তরাঙ্গা টুকটুকে গোলাপ। শত সমুদ্র দুঃখ কষ্টের মধ্যে চঞ্চল ঝর্ণার একটু হাসি, ছল ছল- কল কল পথ চলা আমার ভালোবাসা। আমার অবুঝ মনের সবুজ সজীব ভালোবাসা। আমার শিলা*, আমার শায়লা আক্তার শীলা*। সহজ সরলতার, নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের প্রতীক- আমার শিলু।...................... (চলবে.....)